সংবাদদাতা,আলফাডাঙ্গা : নাজমা ক্লিনিকের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসায় আমেনা বেগম (৬০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর পর মাত্র ২৫ হাজার টাকা দিয়ে পার পেয়ে গেল ক্লিনিক এর মালিক ! বুধবার দুপুর ২টায় রোগীর ছেলে জুয়েল শেখকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে পার পেয়ে যায় আলফাডাঙ্গা সদরে অবস্থিত নাজমা মেডিকেয়া নামে ক্লিনিকটি। ‘ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু’ শীরোনামে গত ৯ আগষ্ট বুধবার বিভিন্ন পত্রিকায় এবং অনলাইন পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চাপে পড়ে যায়। আমেনা বেগমের ছেলে জুয়েল জানান, তার মায়ের জরায়ু অপারেশন করতে গিয়ে মলদ্বারের নাড়ি কেটে ফেলায় তার মা মারা গেছেন। এ নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল অনেক ঘোরাঘুরি করেছি কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। জানতে চাইলে নাজমা মেডিকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুন অর রশীদ বলেন, মৃত আমেনা বেগমের চিকিৎসার খরচ বাবদ তাকে ওই অর্থ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, আমেনা বেগম ২০ জুন নাজমা মেডিকেয়ারে ভর্তি হন। তড়িঘড়ি করে নাম মাত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার ফজলুল করিম জানান, রোগীর জরায়ুতে টিউমার ও পিত্তথলী পাথর হয়েছে। তার তিনটি অপারেশন একসঙ্গে করতে হবে। রোগীর ছেলে জুয়েল শেখ তার মায়ের এতো রোগের সংবাদ শুনে কোনো উপায় না দেখে সব দায়িত্ব ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তারের ওপর ছেড়ে দেন। পরে ডাক্তাররা প্রথমে ওই রোগীর জরায়ু অপারেশন করেন। আর এই সময়ই জরায়ু অপারেশন করতে গিয়ে মলদ্বারের নাড়ি কেটে ফেলেন। ক্লিনিকে ছয় দিন ভর্তি থাকার পর কোনো উন্নতি না হওয়ায় ২৬ জুন রবিবার রোগীকে রিলিজ দেয়া হয়। অবস্থা বেগতিক হওয়ায় ২২ জুলাই শুক্রবার আবার ওই ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। পরে ‘দায়সারা’ চিকিৎসা হয় । পরে রোগীর অবস্থা অবনতি হওয়ায় ২৭ জুলাই বুধবার প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে পরে ঢাকা সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রোগীর কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় আমেনা বেগমকে। পরে মঙ্গলবার ভোর ৫ টায় বোয়ালমারী উপজেলার দেউলি গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। রোগীর ছেলে জুয়েল সাংবাদিকদের জানান, নাজমা মেডিকেয়ারের ডাক্তার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এবং ভুল চিকিৎসায় আমার মাকে বাঁচানো গেল না। আমি লোকজন নিয়ে ক্লিনিকে আসলে ক্লিনিক মালিক শালিশ করে আমাকে ২৫ হাজার টাকা দেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন