স্টাফ রিপোর্টার ঃ এম এ মজিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা চলাকালিন সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেড পাঁকা ভবন ধ্বসে নিহত রুবেল শেখের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের দীঘলবানায় চলছে শোকের মাতম।
শনিবার সকালে উপজেলাধীন দীঘলবানায় গিয়ে দেখা যায়, প্রবাসী রুবেলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। রুবেলের মা ,ছোট ভাই ,বোন ও স্ত্রী বিলাপ করছে। আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠেছে। তিন ভাই বোনের মধ্যে রুবেল ছিল মেঝো। এম এ মজিদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাস করে রুবেল চলে যান মালয়েশিয়াতে। সেখান থেকে ৫ বছর পর ফিরে এসে পার্শবর্তী উপজেলা বোয়ালমারীর মোড়া গ্রামে বিয়ে করেন। তার পিতা আজিজার রহমান ও মালয়েশিয়াতে থাকেন। স্ত্রী, মা, গ্রামের বাড়িতে থাকে। ছোট ভাই সুজন ঢাকার গুলশানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে পড়া লেখা করেন। রোজার শুরুতে রুবেল ছুটিতে বাড়ি আসেন। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর আর মালয়েশিয়ায় যাওয়া হলনা তার।
গত শুক্রবার বিকেল ৬টার দিকে ফুটবল খেলা চলাকালিন সময় দ্বিতীয় অধ্যায় টিনসেড পাঁকা ভবনের স্থাপনা ধ্বসে রুবেল সহ প্রায় অর্ধশতজন আহত হন। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কর্মরত ডাঃ মো. নাজমুল হাসান রুবেলকে মৃত ঘোষনা করেন। রুবেলকে আজ শনিবার বিকাল ৩ টায় জানাযা শেষে আরাজী রুদ্রবানা কবর স্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোহেল চৌধরী আহাদ (৩০), অলক শাহা (৩৫), ফারুক খালাশী(৫০),সাইফুর রহমান(৫০) এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাংবাদিক ও ছাত্রলীগ নেতা মো. কামরুল ইসলাম(২৮),উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত)তৌকির আহম্মদ ডালিম (৩৩) , রাজিব (৩০) , ফারুক (৩০) , শিপলু (২৮),রাজু(১৬),সাইফুল(৫৫),আজগার(৩০),একরামুল(২০),আতিয়ার(৪০),সাইফুর(৬০),মামুন(২৭),আবুল কালাম(৩৫),জুয়েল(৩০),আমির শেখ(১৩) কে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্যদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়া হয়।
এ ব্যাপারে বেলবানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. সেলিনা আক্তার বলেন, উক্ত টিনসেড ভবনটি অনেক পুরাতন ভবন এবং ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দির্ঘ্যদিন যাবত পড়ে ছিল।
অপর দিকে এলাকার সাধারন মানুষ জানান, স্কুলের ভবনটি পরিত্যক্ত থাকায় ভবনের ভিতরে থাকা অয়াল ভেঙ্গে ইট বের করে নিয়ে গেছে কে বা কাহারা। তারা আরও বলেন ভবনটি আগেই ভেঙ্গে ফেলা দরকার ছিল। তাহলে এ র্দূঘটনা হতো না।
এ সময় ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর ও বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. খায়রুজ্জামান, আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. নাজমুল করীম হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। এ সময় আব্দুর রহমান এমপি বলেন, আহতদের মধ্যে অনেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তিনি তাদের সু-চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন সহ ধ্বসে যাওয়া টিনসেড ভবনের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণের ঘোষনা দেন ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকালে এম এ মজিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রায়হান মাস্টার ৮ দলীয় স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের বানা ফুটবল একাদশ ও লোহাগড়া ফুটবল একাদশ ফাইনাল খেলা চলাকালিন সময় খেলা দেখার জন্য দর্শকরা উক্ত বেলবানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিনসেড ভবনের টিনের ছাদে উঠে বসলে ভবনের টিনের চালাসহ দেওয়াল ধ্বসে পড়ে এ ঘটনা ঘটে।