রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৬

আলফাডাঙ্গায় শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট বাণিজ্য!

মুজাহিদুল ইসলাম নাঈম: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চাহাঠী কঠুরাকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে নির্বিঘ্নে চলছে প্রাইভেট বাণিজ্য। সরকার প্রাইভেট বাণিজ্যের ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করলেও তা মানছেন না ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. ইলিয়াস উদ্দিনসহ অন্যরা। 
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলে প্রাইভেট বাণিজ্যের কারণে তাদের সন্তানরা লেখাপড়ায় মনযোগী হচ্ছে না। তারা প্রাইভেটের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এতে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের ক্ষতি হচ্ছে। 
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হেলেঞ্চাহাঠী কঠুরাকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন ইলিয়াস উদ্দিন। এসময় এ প্রতিবেদককে দেখে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে দেন। শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। উল্টো ওই প্রতিবেদককে দেখে নেয়ার হুমকি দেন ইলিয়াস উদ্দিন। তিনি এও বলেন, ‘সাংবাদিকদের ভয় পাই না। পারলে কিছু কইরেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইলিয়াস উদ্দিন গণিতের সিনিয়র শিক্ষক। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে প্রতি ঘন্টায় দুই ব্যাচে ৫০-৬০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী পড়ান।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রাইভেট পড়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বাধ্য করেন ইলিয়াস স্যার! অন্যথায় পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেয়ার ভয় দেখান। তাই বাধ্য হয়ে স্যারের কাছে পড়তে হয় তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, ইলিয়াস স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে বকা-ঝকা করেন, পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেয়ার ভয় দেখান। ওনার কাছে যারা প্রাইভেট পড়ে তাদের পরীক্ষার হলে উত্তর বলে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস উদ্দিন জানান, সরকার কী নিয়ম করেছে তা আমি জানি না। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে আমি শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট পড়াই।’
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলে প্রাইভেট বাণিজ্যের কারণে তাদের সন্তানরা লেখাপড়ায় মনযোগী হচ্ছে না। তারা প্রাইভেটের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এতে কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু তাদের সন্তানদের কিছু করার নেই। কারণ ওই স্যারের কাছে না পড়লে পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেয়ার ভয় দেখানো হয়। তাই ইলিয়াস স্যারের কাছে সন্তানদের পড়াতে বাধ্য হন অভিভাবকরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হেলেঞ্চাহাঠী কুঠরাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম রসুল বলেন, ‘শিক্ষকরা সরকারি প্রাইভেট বাণিজ্যের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী প্রাইভেট পড়ায়। নিয়মের বাইরে প্রাইভেট পড়ায় কি না তা আমার জানা নেই।’
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাফুজা বেগম বলেন, ‘প্রাইভেট বাণিজ্যের ওপর সরকারের বিধি নিষেধ রয়েছে। সরকারি বিধি অমান্য করে কেউ স্কুলের আসবাবপত্র, রুম ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে প্রাইভেট বাণিজ্য করলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন